মধ্যনগর ও ধর্মপাশা প্রতিনিধিঃ সুনামগঞ্জের ধর্মপাশায় ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের একটি কক্ষে অস্থায়ীভাবে থাকা ভোটার তথ্য হাল নাগাদ কার্যক্রমের কক্ষে ঢুকতে বাধা দেওয়ায় পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় এসআই শামীম কবীরসহ ৪ পুলিশ সদস্য আহত হন। আহত পুলিশ সদস্যরা রাতেই ধর্মপাশা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।
এ সময় হামলাকারীরা সেখানে বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি ও সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করার ঘটনাও ঘটায়।
শনিবার রাত আটটার দিকে উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
হামলার ঘটনায় আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন, ধর্মপাশা থানার এসআই শামীম কবীর, কনস্টেবল কানু বিশ্বাস, নান্টু চক্রবর্তী ও জহির রায়হান।
এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে ঘটনাস্থল থেকে ওই রাতেই উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের পাইকুরাটি গ্রামের বাসিন্দা মাধব চন্দ্র দে (৬০) ও জয় চন্দ্র দে (২০) কে আটক করেছে পুলিশ। পুলিশের ওপর হামলা ,বিশৃঙ্খলার পরিবেশ সৃষ্টি ও সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করার অভিযোগে ঘটনার দিন গভীর রাতে আহত ধর্মপাশা থানার এসআই শামীম কবীর বাদী হয়ে ১১জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০-১২জনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন।
ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের একটি কক্ষে শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ওই ইউনিয়নের ভোটার তথ্য হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়। এতে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা ও ভোটার তথ্য হালনাগাদ কার্যক্রম যাতে সুষ্ঠভাবে সম্পন্ন হয় সেজন্য ধর্মপাশা থানার দু’জন এসআই, দু’জন এএসআই ও ছয়জন কনস্টেবল দায়িত্ব পালনে নিয়োজিত হন।
পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন প্রাঙ্গণে ওইদিন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে ৩০০থেকে ৪০০জন মানুষ সাড়িবদ্ধ ভাবে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোটার তথ্য হালনাগাদ কার্যক্রমের জন্য অপেক্ষারত ছিলেন। উপজেলার পাইকুরাটি গ্রামের বাসিন্দা পিন্টু দে পলাশের (৩০) নেতৃত্বে ওইদিন রাত আটটার দিকে অতর্কিতভাবে কয়েকজন ব্যক্তি ভোটার হাল নাগাদ কার্যকমেরে জন্য লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা লোকজনকে ঠেলে ভোটার তথ্য হালনাগাদ কার্যক্রমের কক্ষে ঢোকার চেষ্টা করেন। এতে সেখানে থাকা পুলিশ সদস্যরা বাধা দেন। এ অবস্থায় ক্ষিপ্ত হয়ে পিন্টু দে পলাশের (৩০) হুকুমে লাঠি, বাঁশ, পাথর, বালু ও কাঁদামাটি দিয়ে হামলাকারীরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়।
হামলায় ধর্মপাশা থানার এসআই শামীম কবিরসহ চারজন পুলিশ সদস্য আহত হন। হামলাকারীরা পাইকুরাটি ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবনের বারান্দায় থাকা ৫টি ব্রেঞ্চ , ২টি চেয়ার ভেঙ্গে ফেলার পাশাপাশি পরিষদ ভবনের এক পাশে থাকা পুলিশ সদস্যদের ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেলের ট্রাংকি লাঠি দিয়ে আঘাত করে হামলাকারীরা এটি বিনষ্ট করে। রাত সোয়া আটটার দিকে একদল পুলিশ নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন ধর্মপাশা সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার আলী ফরিদ ও ধর্মপাশা থানার ওসি মো. মিজানুর রহমান। হামলাকারীরা ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় ঘটনাস্থল থেকে মাধব চন্দ্র দে ও জয় চন্দ্র কে আটক করে।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, দায়িত্বপালনরত পুলিশের ওপর হামলা,সরকারি কাজে বাধা দেওয়া ও সরকারি সম্পদ বিনষ্ট করার ঘটনায় ১১জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ১০-১২জনকে আসামি করে শনিবার গভীর রাতে ধর্মপাশা থানায় একটি মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় আটক হওয়ায় ওই দুজনকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। অন্যান্য আসামিদের কে গ্রেপ্তারের চেষ্ঠা চলছে। ওই দুজন আসামিকে রবিবার দুপুরে ধর্মপাশা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।