নিজস্ব প্রতিবেদক: সাংবাদিকদের অর্থ দন্ডসহ নিবর্তন মূলক বিধান রেখে প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের উদ্যোগে উদ্বেগ, তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে)। নেতৃবৃন্দ এটিকে সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা হরণের আরেকটি অপ-কৌশল হিসেবে অভিহিত করে অংশীজনদের মতামত ছাড়া আইন সংশোধন থেকে বিরত থাকার আহবান জানান। একই সঙ্গে প্রেস কাউন্সিলকে শক্তিশালী করতে সংশ্লিষ্ট সকলের মতামতের ভিত্তিতে আইন সংশোধনের দাবি জানান।
বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ ও মহাসচিব নূরুল আমিন রোকন এক যুক্ত বিবৃতিতে বলেন, মন্ত্রিসভায় সাংবাদিকদের তিরস্কারের পরিবর্তে অর্থ দন্ডের বিধান রেখে প্রেস কাউন্সিল সংশোধন আইন-২০২২ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, আগে অপরাধের জন্য সাংবাদিকদের প্রেস কাউন্সিল শুধু তিরস্কার করতে পারত। এখন সেখানে অর্থ দন্ডের বিধান যুক্ত হচ্ছে এবং এটি প্রিন্ট ও ডিজিটাল সব সংবাদ মাধ্যমের জন্য বলবৎ হবে। একই সঙ্গে খসড়া আইনে সংবাদপত্র বা সংবাদ সংস্থার বিরুদ্ধে স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে ব্যবস্থা নেয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে প্রেস কাউন্সিলকে।
তাছাড়া প্রেস কাউন্সিলের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে অসাংবাদিক তিন জনকে অন্তর্ভুক্ত করার বিধান যুক্ত করা হয়েছে। বিবৃতিতে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ বলেন, বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল একটি বিধিবদ্ধ সংস্থা। সংবাদপত্রের স্বাধীনতা রক্ষা ও সাংবাদিকতার মান উন্নয়নের লক্ষ্যে এটি গঠন করা হয়। কিন্তু খসড়া আইনে এটিকে সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষার পরিবর্তে শাস্তি দেওয়ার প্রতিষ্ঠানে রূপ দেওয়া হচ্ছে। যা কার্যকর হলে মুক্ত গণমাধ্যম ও স্বাধীন সাংবাদিকতার জন্য চরম হুমকি হয়ে দাঁড়াবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বর্তমান সরকার নিজেদের অবাধ তথ্য প্রবাহে বিশ্বাসী এবং গণমাধ্যম বান্ধব বলে দাবি করেন। অথচ ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ বিবিধ কালা কানুনের মাধ্যমে স্বাধীন সাংবাদিকতাকে বন্দি করে রেখেছে। এরপরও নিজেদের অনিরাপদ ভেবে নতুন নতুন কালা কানুন প্রণয়নে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। প্রেস কাউন্সিল আইন সংশোধনের উদ্যোগ তারই ধারাবাহিকতা।
নেতৃবৃন্দ প্রেস কাউন্সিলকে আরো কার্যকর ও শক্তিশালী করতে আইন সংশোধনের আগে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ অংশীজনদের সঙ্গে খোলা মনে আলোচনার দাবি জানিয়েছেন। একই সঙ্গে বর্তমান প্রেস কাউন্সিলকে এক দলীয় সদস্যদের গন্ডি থেকে বের করে ঐতিহ্য অনুযায়ী সকল মতের সাংবাদিক ও সম্পাদক প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্তিরও দাবি জানান।