নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডনে পলাতক তারেক জিয়া সৌদি আরবে ওমরাহ করার জন্য যেতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার তাকে অনুমতি দেয়নি। বর্তমানে ব্রিটিশ সরকারের রাজনৈতিক আশ্রয়ে রয়েছেন তারেক জিয়া। তিনি ব্রিটিশ পাসপোর্ট এখনো পাননি। যদিও তার কন্যা জাইমা রহমান ব্রিটিশ পাসপোর্ট পেয়েছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, একটি পারমিট নিয়ে তিনি বিদেশ যেতে পারেন। সেই পারমিট পাসের জন্য ব্রিটেনের বর্ডারগার্ড সিকিউরিটির কাছ থেকে অনুমতি নিতে হয়। এর আগেও এরকম অনুমতি নিয়ে তারেক জিয়া সৌদি আরবে ওমরাহ করতে গিয়েছিলেন এবং সেখানে তিনি বেগম খালেদা জিয়ার সাথে সাক্ষাৎ করেছিলেন। গত ১৪ বছরে তারেক জিয়ার এটি ছিলো একমাত্র বিদেশ সফর। এবারও তারেক জিয়া সৌদি আরবে ওমরাহ করার জন্য যেতে চেয়েছিলেন। ওমরাহয় যাওয়ার জন্য তিনি ব্রিটিশ হোম ডিপার্টমেন্টে আবেদনও করেছিলেন।
অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, তারেক জিয়া তার স্ত্রী ডা. জোবাইদা রহমানকে নিয়ে সৌদি আরবে ওমরাহ পালনের জন্য লিখিত আবেদন দিয়েছিলেন এ বছরের মার্চ মাসে। সেই আবেদনটিতে বলা হয়েছিলো যে, তিনি একজন ধর্মপ্রাণ মুসলমান। এর আগেও তিনি ওমরাহ করেছিলেন। এজন্য এবার তিনি ওমরাহয় সৌদি আরব যেতে চান এবং এজন্য তিনি ব্রিটিশ সরকারের কাছ থেকে পারমিট পাস চান। তারেক জিয়া এটিও বলেছিলেন যে, একমাস পর তিনি সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরবেন। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার নানা বিষয় পর্যালোচনা করে গত ৩১ জুলাই তার আবেদনটি নাকচ করে দিয়েছে। তার আবেদনটি নাকচ করার ক্ষেত্রে তিনটি কারণ উল্লেখ করেছে ব্রিটেনের হোমল্যান্ড সিকিউরিটি। তারা বলছে যে, তারেক জিয়ার সঙ্গে বিভিন্ন সন্ত্রাসী এবং জঙ্গিবাদীগোষ্ঠীর যোগসাজশের অভিযোগ রয়েছে এবং এই অভিযোগগুলো ব্রিটিশ সরকার যাচাই-বাছাই করে দেখছে। এই অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তাকে সৌদি আরবে যেতে দেওয়াটা সমীচীন মনে করা হচ্ছে না।
দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বলা হয়েছে যে, তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে অনেকগুলো আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ এখন তদন্তাধীন রয়েছে। তার দুটি ব্যাংক একাউন্ট জব্দ করা হয়েছে। এরকম বাস্তবতায় তার সৌদি আরবে যাওয়া ব্রিটিশ সরকার সমীচীন মনে করছেন না। তৃতীয় কারণ বলা হয়েছে যে, তারেক জিয়া বাংলাদেশে দণ্ডিত এবং তার বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ রয়েছে। সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে। যে কারণে তাকে যদি সৌদি আরবে পাঠানো হয় তাহলে সৌদি সরকার বাংলাদেশের কাছে তাকে হস্তান্তর করতে পারে। ইতিমধ্যে ব্রিটিশ সরকারের কাছে বাংলাদেশ সরকার একাধিকবার তারেক জিয়াকে ফেরত দেওয়ার জন্য আবেদন করেছে এবং এই আবেদনগুলো প্রত্যেকটি বিবেচনাধীন অবস্থায় রয়েছে। সে আবেদনে তারেক জিয়াকে কেন বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর প্রয়োজন সে সম্পর্কে সুনির্দিষ্ট ভাবে বলা হয়েছে। ব্রিটিশ সরকার মনে করছে, যেহেতু তারেক জিয়াকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর বিষয়টি পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর্যায়ে আছে। কাজেই, এই পর্যায়ে তাকে সৌদি আরবে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া সমীচীন নয়। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, আনুষ্ঠানিক কারণের বাইরে মূল যে কারণটিতে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি তাকে অনুমতি দেয়নি তার প্রধান কারণ হলো তারেক জিয়ার অর্থ আত্মসাৎ এবং সন্ত্রাসের সাথে যোগসূত্র।