কুমিল্লা প্রতিনিধি: কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় আবদুল জলিল মিয়া নামে ৭৫ বছর বয়সী এক বৃদ্ধকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করেছেন তাঁর ছেলে। মারধরের ১ মিনিট ১৬ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হলে এলাকাজুড়ে সমালোচনা শুরু হয়। এ ঘটনায় থানায় মামলা হলে শনিবার সকালে অভিযুক্ত ছেলে আবদুল মান্নানকে (৩৫) গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ। আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন। এর আগে গত বৃহস্পতিবার শশীদল ইউনিয়নের নাগাইশ গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমি নিয়ে গত কয়েক দিন ধরে বাবা-ছেলের মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। ছেলে বৃদ্ধ বাবাকে দিয়ে জোরপূর্বক জমি লিখে নেওয়ার চেষ্টা করেন। এতে ব্যর্থ হলে বাবার ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। বৃহস্পতিবার বিকেলে বৃদ্ধ বাবা তাঁর ঘরেই ছিলেন। ঘরের ভেতর তিনি বৃদ্ধ বাবার জামাকাপড় ছিঁড়ে ফেলেন। এ সময় ওই বৃদ্ধ ঘর থেকে বের হওয়ার পর লাঠি দিয়ে বাবাকে পেটাতে থাকেন ছেলে। এ সময় চিৎকার করতে থাকেন এই বৃদ্ধ বাবা।
এদিকে এ ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দেওয়া হয়। ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে মুহূর্তের মধ্যেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। প্রতিবাদের ঝড় ওঠে সর্বত্র। এরপর তাঁকে গ্রেপ্তারের দাবি জানান স্থানীয় লোকজন। শনিবার সকালে ব্রাহ্মণপাড়া থানা-পুলিশ আবদুল মান্নানকে তাঁর নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে। এ ঘটনায় মান্নানের বড় ভাই নাঈম ইসলাম বাদী হয়ে বৃদ্ধ বাবাকে মারধরের ঘটনায় একটি মামলা করেছেন বলে জানিয়েছে পুলিশ।
বৃদ্ধ বাবা আবদুল জলিল মিয়া এ ঘটনায় কান্নায় ভেঙে পড়েছেন। কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি জানান, জমি লিখে দেওয়ার জন্য তাঁর ছেলে চাপ দিয়ে আসছেন। জমি লিখে না দেওয়ায় তাঁকে এভাবে বেধড়ক মারধরের শিকার হতে হয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) অপ্পেলা রাজু নাহা বলেন, জমি লিখে না দেওয়ায় বৃদ্ধ বাবাকে মারধর ঘটনা ভাইরাল হলে চারদিকে নিন্দার ঝড় ওঠে। শনিবার সকালে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা হয়েছে। তাঁকে আদালতে মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।
ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোহেল রানা বলেন, ঘটনাটি অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ। তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।