অনলাইন ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সোমবার (৫ সেপ্টেম্বর) থেকে চারদিনের ভারত সফর শুরু করতে যাচ্ছেন। এ সফরের আগে ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইকে সাক্ষাৎকার দিয়েছেন তিনি। মোদির আমন্ত্রণে ভারত যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী, সই হবে বেশ কিছু স্মারক।
এএনআই শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকারটি রোববার (৪ সেপ্টেম্বর) তাদের ওয়েব সাইটে বেশ কয়েকটি প্রতিবেদন হিসেবে প্রকাশ করেছে।
সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নদীর পানি বণ্টনে বিশেষ করে তিস্তা নদীর ক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে তার দেশের সহযোগিতার বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, চ্যালেঞ্জ থাকলেও সেগুলো এমন কিছু নয় যা পারস্পরিক ভাবে সমাধান করা যায় না।
তিনি বলেন, এটা খুবই দুঃখজনক যে, আমরা একটি… আপনি জানেন… এটি ঝুলে আছে। (বাংলাদেশে) ভারত থেকে পানি আসে, তাই ভারতের আরও উদারতা দেখাতে হবে। কারণ এতে উভয় দেশই লাভবান হবে। কখনও কখনও পানির অভাবে আমাদের জনগণও অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পানি না পেয়ে বিশেষ করে তিস্তায় আমরা ফসল রোপণ করতে পারিনি এবং আরও অনেক সমস্যা দেখা দিয়েছে। তাই আমি মনে করি এর সমাধান হওয়া উচিত। অবশ্য, হ্যাঁ আমরা দেখেছি- ভারতের প্রধানমন্ত্রী (মোদি) …আপনি জানেন… এই সমস্যাটি সমাধান করার জন্য অনেক আগ্রহী, কিন্তু সমস্যাটি আপনার দেশেই। তাই… আমরা আশা করি এটি (সমাধান) হবে, আপনি জানেন… এটি সমাধান করা উচিত।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, দুই দেশ গঙ্গা নদীর পানি ভাগ করে নিয়েছে।তিনি বলেন, শুধু গঙ্গার পানিই আমরা ভাগাভাগি করেছি। এই পানির বিষয়ে আমরা চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছি। কিন্তু আমাদের আরও ৫৪টি নদী আছে। হ্যাঁ… এটি একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা, তাই এটি সমাধান করা উচিত।
সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, বাংলাদেশ একটি ধর্ম নিরপেক্ষ দেশ, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হলেই তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া হয়।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশ্বস্ত করেছেন যে তার সরকার ধর্ম নিরপেক্ষতাকে দৃঢ় ভাবে সমর্থন করে এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ব্যাহত করার যে কোনো প্রচেষ্টা অবিলম্বে মোকাবেলা করা হবে।
শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা যতক্ষণ ক্ষমতায় থাকি ততক্ষণ আমরা সর্বদা অগ্রাধিকার দিই এবং আমি সর্বদা তাদের [সংখ্যালঘুদের] বলি যে আপনি আমাদের নাগরিক। এটা একটা ভয়ানক পরিস্থিতি, কিন্তু আপনি জানেন.. শুধু বাংলাদেশের নয়; ভারতেও সংখ্যালঘুরা ভুগছে।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি যে উভয় দেশেরই তাদের উদারতা প্রদর্শন করা উচিত, কারণ বাংলাদেশ অনেক ধর্মের একটি ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। আর এখানে রয়েছে অনেক ধর্মীয় সম্প্রীতি। তাই দু-একটা ঘটনা। তাৎক্ষণিক ভাবে ঘটে যায়… বিশেষ করে আমার দল… আমার দলের লোকজনও এ ব্যাপারে খুবই সচেতন, তেমনি আমার সরকারও। আমরা অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ করি।
এছাড়াও সাক্ষাতকারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত-বাংলাদেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, কোনো কোনো ক্ষেত্রে মতভিন্নতা সত্ত্বেও দুদেশের একসঙ্গে কাজ করার প্রচুর সুযোগ রয়েছে। এবং দুই দেশ এভাবে কাজ করে সাফল্যও অর্জন করেছে।
ইউক্রেনে আটকা পড়া বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে আনা এবং ভ্যাকসিন সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও তার সরকারকে ধন্যবাদ জানান শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এর মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণ হয়েছে আমাদের বন্ধুত্ব পরীক্ষিত।