মঙ্গলবার, ০৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৬:৪৬ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
রাজধানীর মতিঝিল এলাকায় যুবলীগ নেতা হাসান আবারো বেপরোয়া : থেমে নেই চাঁদাবাজি বিশ্ব কন্যা শিশু দিবসে নেলসন ম্যান্ডেলা পিস এ্যাওয়ার্ড পেলেন সাংবাদিক এম শিমুল খান বিআরটিসির চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলামের কারনে ঘরে বসেই বকেয়া বুঝে পাচ্ছেন বিআরটিসির অবসরপ্রাপ্তরা যে কোন ষড়যন্ত্র রুখে দিবে বিআরটিসির কর্মীরা বর্তমান চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম বিআরটিসিতে এনেছেন আমূল পরিবর্তন বিআরটিসি কল্যানপুর বাস ডিপোর সাবেক ম্যানেজার নুর-ই-আলমের ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা ও দুদক বরাবর অভিযোগ বিআরটিসি বরিশাল বাস ডিপোর সাবেক ম্যানেজার জামশেদ আলীর ব্যাপক অনিয়ম ও দূর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধান উপদেষ্টা ও দুদক বরাবর অভিযোগ প্রকাশিত ও প্রচারিত সংবাদের প্রতিবাদ মধ্যরাতে গোপনে বঙ্গবন্ধুর মাজার জিয়ারত করেন তারেক রহমান সওজ বিভাগের প্রকৌশলী তাপসী দাসের ফের খুলনায় আসার খবরে ক্ষিপ্ত নাগরিক সমাজ

স্কুল নাকি গোডাউন?

Reporter Name
  • Update Time : রবিবার, ৪ সেপ্টেম্বর, ২০২২
  • ৩৬৭ Time View

বিশেষ প্রতিনিধি : পুরান ঢাকার বংশাল থানার ৪১ নং ওয়ার্ডের লালমোহন সাহা স্ট্রিট এলাকায় আছে এক অদ্ভুত স্কুল। একটি মাত্র জীর্ণ কক্ষেই চলছে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। স্কুলের নাম মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত স্কুলটি দেখে প্রথমেই মনে হবে, এটা কোনও গোডাউন নয়তো? সাইনবোর্ড থাকায় ‘প্রমাণ’ হয় এখানে একটি স্কুল আছে। তবে নেই কোনও শ্রেণিকক্ষ, খেলার মাঠ, পাঠাগার, নিরাপদ পানির ব্যবস্থা। এমনকি একটি টয়লেটও খুঁজে পাওয়া গেলো না তাতে।

যারা উপায় না পেয়ে ভর্তি হয়েছিল তারাও এখন স্কুলটি ছেড়ে অন্য কোথাও ভর্তি হওয়ার চেষ্টায় আছে। পড়ার ন্যূনতম পরিবেশ না থাকলেও কাগজে-কলমে শিক্ষার্থী আছে ৫৪ জন। আছেন চার জন শিক্ষক ও একজন অফিস সহকারী। এ দিয়েই স্কুলটি ‘পরিচালনা’ করা হচ্ছে। এরমধ্যে একজন শিক্ষক আবার দীর্ঘদিন ‘প্রশিক্ষণ’ নিচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্কুলটির প্রধান শিক্ষক রুমা চৌধুরী।

স্কুলটির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক বলেন, সরকারি স্কুল বলে আমার মেয়েকে এই স্কুলে ভর্তি করিয়েছিলাম। কিন্তু কোনও সুযোগ-সুবিধাই নেই। ভর্তির পর থেকে নানান ঝামেলা পোহাতে হচ্ছে। ছোট্ট একটা রুমে সব ক্লাসের শিক্ষার্থীদের গাদাগাদি করে বসানো হয়।

শাহাজান মিয়া নামের আরেক অভিভাবক বলেন, আমার মেয়ের স্কুলে পিপাসা লাগলে অথবা ওয়াশরুমে যাওয়ার দরকার হলে তাকে আবার বাসায় আসতে হয়। অনেক সময় পাশের আরেকটি স্কুলে যেতে হয় তাকে। দীর্ঘদিন ধরেই এই অবস্থা। এখানকার কোনও জনপ্রতিনিধি বা শিক্ষাবোর্ড একটু নজর দিলে স্কুলটিতে অন্তত পড়াশোনাটা চালিয়ে যাওয়া যেত। কিন্তু স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও দায়িত্বরত সবাই নীরব।

স্কুলের প্রধান শিক্ষক রুমা চৌধুরী বলেন, সত্যি বলতে স্কুলটিতে পড়ার পরিবেশ নেই। বসার জায়গা নেই, ক্লাসের জায়গা নেই, ওয়াশরুম নেই, নিরাপদ পানি নেই। এটা নামেমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এই স্কুলের জন্য সরকারিভাবে বরাদ্দ আসে না। যে কারণে দরকারি কোনও কিছু কেনা যায় না। তিনি আরও বলেন, আমি এই স্কুলে জয়েন করার পর থেকে শুনেছি স্কুলটি বাতিল করা হবে। কিন্তু সেটার কার্যক্রমও দেখছি না। যদি তা না করা হয় তবে যতদিন চালু থাকবে ততদিন যেন এখানে সুষ্ঠু পরিবেশ থাকে।

এ বিষয়ে ৪১ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর সারোয়ার হোসেন আলো জানান,মুসলিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ৫০-৬০ বছরের পুরনো। স্কুলটি বাতিল করার পরিকল্পনা হয়েছিল। আমি তা হতে দেইনি। এই সরকারের আমলে স্কুল বিলুপ্তির বিষয়টা বেমানান। তবে এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন জরুরি।

সূত্রাপুর থানা শিক্ষা অফিসার মইনুল হোসাইন বলেন, ছয় থেকে সাত বছর আগে সংসদীয় কমিটির পাঁচ-সাত জন এমপি স্কুলটি পরিদর্শন করেছেন। তৎকালীন মন্ত্রী মহোদয় জনাব মোস্তাফিজুর রহমানও ছিলেন। তখন চিন্তা ছিল স্কুলটা কীভাবে রক্ষা করা যায়। কিন্তু এলজিডির নাকি নির্দিষ্ট একটা মানদণ্ড আছে যে, একটা স্কুল ন্যূনতম কতো ফুট বাই কত ফুট হবে। এটা ওই মানদণ্ডে পড়ে না। মন্ত্রী মহোদয় বলেছিলেন, এটা যদি কোনোভাবে একতলার ওপরে দুই বা তিন তলা পর্যন্ত ওঠানো যায়, তবে হয়তো স্কুলটা রক্ষা করা সম্ভব। কিন্তু ইঞ্জিনিয়াররা বলেছেন তা সম্ভব হবে না। কারণ এখানে যতটা জায়গার প্রয়োজন ততটুকু নেই।

তিনি আরও বলেন, তখনকার সংসদীয় কমিটির একটা সুপারিশ আমি দেখেছিলাম যে, এই স্কুলটার যেহেতু আয়তন বাড়ানো যাবে না তাই বাতিল করে অন্য আরেকটি স্কুলের সঙ্গে অ্যাডজাস্ট করে দেওয়া হোক। আমরা দীর্ঘদিন ধরে এই প্রস্তাব দিয়ে আসছি। স্কুলটির পাশের একটা স্কুল আছে দক্ষিণ মুহসেন্দী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়- ওটার সঙ্গে সংযুক্ত করে দেওয়ার। মন্ত্রণালয় বা ডিজি অফিস থেকে একটা চিঠি এলে এটা বাস্তবায়ন হবে। কিন্তু দেখা যায় একেবারে শেষ পর্যায়ে সচিব বা ডিজি কোনও কারণে বদলি হয়ে যান বা অবসরে চলে যান। পরে যিনি নতুন আসেন তিনি আবার প্রথম থেকে শুরু করেন। এই কারণে স্কুলটি বাতিলও করা হচ্ছে না, উন্নয়নও হচ্ছে না। এখানে শুধু একটা বরাদ্দ (স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্লান) হয়। যা দিয়ে তেমন কিছুই হয় না।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 agamirbangladesh24.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin