বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৩:১০ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
সওজ বিভাগের প্রকৌশলী তাপসী দাসের ফের খুলনায় আসার খবরে ক্ষিপ্ত নাগরিক সমাজ গোপালগঞ্জে নবাগত জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামানের সাথে সাংবাদিকদের মতবিনিম সভা অনুষ্ঠিত ঢাকার দোহারে জামায়াতের কর্মী সন্মেলন অনুষ্ঠিত ফায়ার সার্ভিস অধিদপ্তরে বিদ্রোহের ষড়যন্ত্র! ঘুরে দাঁড়িয়েছে বিআরটিসি : ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে লাভ ৪৭ কোটি ৭১ লাখ টাকা  ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে লাভ ২৫ কোটি ৪ লাখ টাকা আওয়ামী সরকারের বৈষম্যের শিকার একজন তাজুল ইসলাম বিআরটিসির দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছেন বর্তমান চেয়ারম্যান মোঃ তাজুল ইসলাম এবার স‌রি‌য়ে দেওয়া হ‌চ্ছে বিভাগীয় ক‌মিশনার ও ডিসিদের খুলনার পাইকগাছায় বড় ভাইয়ের রডের আঘাতে ছোট ভাইয়ের ৮দিন পর মৃত্যু অবৈধ টাকায় অবাধ সাম্রাজ্য নারীলিপ্সু পাসপোর্ট অফিসের পরাগের

খুলনার পাইকগাছার কপিলমুনিতে দূর্গোৎসবে বাড়তি নজর কাড়বে প্রাণ পূরুষ রায় সাহেবের জীবন চিত্রের ভাষ্কর্য

Reporter Name
  • Update Time : বৃহস্পতিবার, ১৯ অক্টোবর, ২০২৩
  • ১৮১ Time View

মোঃ মানছুর রহমান জাহিদ, পাইকগাছা, খুলনাঃ সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দূর্গাপূজা বা দূর্গোৎসব। সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির জনপদ খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলার কপিলমুনিতে প্রতি বছরের ন্যায় এবারও দূর্গোৎসবকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে সাজ সাজ রব। দূর্গাপূজা মূলত হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব হলেও জনপদে সেই স্মরণাতীতকাল থেকে সার্বজীনন বাঙালির উৎসব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। এক কথায় ধর্ম যার যার উৎসব যেন সবার।

সনাতনীদের মধ্যে দূর্গাপূজাকে আবার বড় পূজা হিসেবেও দেখা হয়। পূজার পাশাপাশি মূর্তির সৌন্দর্য বর্ধন, মন্ডপ, সাজস্বজ্জা, আলোকস্বজ্জা ও গেট তৈরিতেও স্ব-স্ব কর্তৃপক্ষ এক অলিখিত প্রতিযোগীতায় নেমে পড়ে। পূজারী দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকৃষ্ট ও মন কাঁড়তে পূজার পাশাপাশি বাড়তি আযোজন করা হয় ধর্মীয় যাত্রাপালার সাথে সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠান। স্থানীয় বিশিষ্ট ব্যক্তি-বর্গ, স্থান বা ইতিহাস-ঐতিহ্যকেও প্রাধান্য দেওয়া হয় পূজার পাশাপাশি বাড়তি আয়োজনে। এতে দর্শনার্থী পূজারীদের কাছে মূল পূজার পাশাপাশি উঠে আসে স্ব-স্ব এলাকার ঐতিহ্য ও বিশিষ্টজনদের জীবনী ও তাদের কর্মযজ্ঞ সম্পর্কে।

এবারও তার ব্যাতিক্রম হয়নি। মূর্তি ও মন্ডপের সৌন্দর্য বর্ধনের পাশাপাশি প্রতিযোগীতায় উঠে এসেছে গেট। তবে এবার পূজায় উপজেলার কপিলমুনিস্থ মিলন মন্দির কেন্দ্রীয় পূজা মন্ডপ কর্তৃপক্ষ মূল পূজার পাশাপাশি দর্শনার্থীদের জানান দিতে উপস্থাপন করেছে একটি ব্যতিক্রমী বিষয়। যা সনাতনীদের পাশাপাশি ভিন্নধর্মাবলম্বীদের মাঝেও দারুণভাবে নাড়া দিয়েছে। মিলন মন্দির প্রগতি সংঘের ব্যানারে তারা এবার তুলে এনেছে আধুনিক কপিলমুনির রুপকার জনপদের সাধারণ মানুষের প্রাণ পূরুষ স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুকে।

এবার পূজায় মূল ধর্মীয় আচার ও রীতি অনুযায়ী ২ কার্তিক শুক্রবার মহাষষ্ঠীতে সন্ধ্যা ৬ টায় মঙ্গল প্রদীপ প্রজ্বলন ও চন্ডীপাঠ, সন্ধ্যা ৭ টায় শ্রীমদ্ভবত গীতার শ্লোক স্তব। ৩ কার্তিক শনিবার মহা সপ্তমীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা, গান ও নৃত্যানুষ্ঠান। ৪ কার্তিক রবিবার মহা অষ্টমীর সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় দেশের এক সময়ের একমাত্র যাদু চক্র জোনাকি যাদু চক্রের যাদু প্রদর্শনী ও সাতক্ষীরা সঙ্গীত একাডেমীর পরিবেশনায় মনোজ্ঞ সঙ্গীতানুষ্ঠান।

এতে যাদু প্রদর্শন করবেন, বাংলাদেশের অন্যতম খ্যাতিমান জাদুশিল্পী যাদুজগতের উজ্জ্বল নক্ষত্র জাদুসূর্য পি.সি.সাহা।
৫ কার্তিক সোমবার মহানবমীতে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় সংগীতানুষ্ঠান ও রাত ৯টায় অনির্বাণ শিল্প গোষ্ঠীর পরিবেশনায় ‘‘নবরূপে মহা দুর্গা’’তবে এবার পূজায় বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে মিলন মন্দির কেন্দ্রীয় পূজা মন্ডপে মিলন মন্দির প্রগতি সংঘ আধুনিক কপিলমুনির স্থপতি স্বর্গীয় রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধুকে উপস্থাপন করেছে ভিন্নরুপে।

রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু গোটা জীবন পরিক্রমার ভাস্কর্য প্রদর্শন করে জনপদের মূল পূজার পাশাাশ ব্যাতিক্রমী সংযোজনে অনন্য নজির স্থাপন করতে চলেছেন। রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ১৮৯০ খৃষ্টাব্দের ২০ মে কপিলমুনিতে জন্মগ্রহন করেন। তার পিতার নাম যাদব চন্দ্র সাধু ও মাতার নাম সহচরী দেবী। তিনি ৪ ভাই ও ৩ বোনের মধ্যে ভাইদের সারীতে তৃতীয় ছিলেন। ভাস্কর্যটির মাধ্যমে কর্তৃপক্ষ তার শৈশবের একটি খন্ড চিত্র তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। যেখানে বাবা-মায়ের সাথে খেলার ছলে দেখা যাবে শিশু বিনোদকে।

রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ছিলেন, জনপদের অন্যতম শিক্ষানুরাগী। জন্মস্থান কপিলমুনি থেকে প্রতিদিন পায়ে হেঁটে প্রায় ৭ কি:মি: দূরে কপোতাক্ষ নদ পেরিয়ে বিশ্ববরেণ্য বিজ্ঞানী স্যার আচার্য পিসি রায় প্রতিষ্ঠিত রাড়লী আর.কে.বি.কে হরিশচন্দ্র ইনস্টিটিউটে অধ্যায়নে যেতেন। তিনি স্যার পিসি রায়ের আশীর্বাদপুষ্ট শিক্ষার্থী ছিলেন। ভাস্কর্যের মাধ্যমে বিনোদের শিক্ষাজীবনের একটি খন্ড চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। যেখানে স্যার পিসি রায়কে প্রণাম করতে দেখা যাচ্ছে শৈশবের ক্ষুদে শিক্ষার্থী বিনোদকে। শৈশবে স্কুলের পাঠ শেষ না করেই বিনোদ তার বাবার হাত ধরে ব্যবসা জীবনে পদার্পণ করেন।

ব্যবসায়ীক দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে গিয়ে ক্রেতা সন্তুষ্টি অর্জনে তিনি বিভিন্ন সময় নানা কৌশলের আশ্রয় নিতেন। কেরোসিনের ব্যবসায় তৎকালীণ ক্রেতাদের হারিকেন ও কুপি (টেমি বা লম্প) জন্য বিনামূল্যে সলতে বিতরণ করতেন। ব্যবসা জীবনে এমন নানা ঘটনার জন্ম দিয়ে সফলতার স্বাক্ষর রাখেন। ভাস্কর্যে বিনোদের ব্যবসা জীবনের চিত্র তুলে ধরতে দু’জন ক্রেতাসহ তাকে দেখা যাবে কেরোসিন বিক্রি করতে।

রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু ছিলেন, কপিলেশ্বরী মায়ের আশীর্বাদপুষ্ট। আধুনিক কপিলমুনির রুপকার ছিলেন তিনি। জনপদের ব্যবসা-বাণিজ্য সম্প্রসারণে নিজ নামে প্রতিষ্ঠা করেন বিনোদগঞ্জ। এভাবে ক্ষণজন্মা বিনোদ ক্রমান্বয়ে একদিন হয়ে ওঠেন, রায় সাহেব বিনোদ বিহারী সাধু হিসেবে। নানা কীর্তিগাঁথায় ব্রিটিশ সরকার তাকে এ উপাধিতে ভূষিত করে সম্মাননা প্রদান করেন। মূলত বিনোদ তার জীবদ্দশায় নিজ নামে বিনোদগঞ্জ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি মায়ের নামে কপিলমুনি সহচরী বিদ্যামন্দির, ব্যবসায়ীক লেনদেন ও ব্যবসায়ীদের সঞ্চয়ী করতে সিদ্ধেশ্বরী ব্যাংক, অমৃতময়ী মিলনায়তন, ভরত চন্দ্র হাসপাতাল, একমাত্র বেদ মন্দির, কপিলেশ্বরী মায়ের মন্দির পূণ:নির্মাণ, সহচরী সরোবর, দক্ষিণাঞ্চলে প্রথম এক্সরে মেশিন, প্রথম বৈদ্যুতিক বাতি প্রজ্জ্বলন জেনারেটরের মাধ্যমে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2022 agamirbangladesh24.com
Developed by: A TO Z IT HOST
Tuhin