মো: মিজানুর রহমান, পটুয়াখালীঃ বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ভেটেরিনারি অনুষদের পক্ষ থেকে পটুয়াখালী বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও গবেষক অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামকে সংবর্ধনা প্রদান করা হয়েছে। শনিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক কমপ্লেক্সে ওই সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ভেটেরিনারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন প্যাথলজি বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মকবুল হোসেন।
এ সময় পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামের পাশাপাশি সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আলিমুল ইসলাম, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ লুৎফুর রহমান ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ানকেও সংবর্ধনা প্রদান করা হয়। সংবর্ধনাপ্রাপ্ত সকলেই বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদের প্রাক্তন শিক্ষার্থী।
অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম ১৯৯৪ সালে বাকৃবির ভেটেরিনারি অনুষদ থেকে কৃতিত্বের সাথে ডিভিএম ও ১৯৯৮ সালে একই বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মাকোলজি বিভাগ থেকে প্রথম শ্রেনীতে প্রথম স্থান অর্জনসহ চ্যান্সেলর স্বর্নপদক লাভ করে মাস্টার অব সাইন্স ইন ফার্মাকোলজি ডিগ্রি অর্জন করেন। ড. ইসলাম ১৯৯৯ সালে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে প্রাণীসম্পদ ক্যাডার হিসাবে যোগদানেরে মাধ্যমে কর্মজীবন শুরু করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্নজার্নালে প্রকাশিত তার রিসার্চ আর্টিকেলের মোট সংখ্যা ১০৮টি। গুগোল স্কলারের সর্বশেষ তথ্যমতে প্রকাশিত আর্টিকেলের সাইটেশন সংখ্যা ২২৩৪ টি।
অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম সংবর্ধনায় তার অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, আমি বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি অনুষদের সকল শিক্ষক, সহকর্মী, শিক্ষার্থী এবং সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাই। এই সংবর্ধনা শুধু আমার জন্যই নয়, এটি আমাদের পুরো অনুষদের সম্মান এবং সাফল্যের প্রতিফলন। বাকৃবি আমার শিক্ষাজীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, এখান থেকেই আমার পেশাগত পথচলার ভিত্তি গড়ে উঠেছে। আজ উপাচার্য হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের শীর্ষ উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে দায়িত্ব নেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমি যেমন গর্বিত, তেমনি দায়িত্বের ব্যাপারেও সচেতন।
আমার লক্ষ্য থাকবে শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়ন, গবেষণাকে আরও কার্যকর করা এবং বিশেষ করে ভেটেরিনারি ও কৃষি ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করা। আমি আশা করি, আগামীতেও বাকৃবি, পবিপ্রবি’র ভেটেরিনারি অনুষদসহ দেশের সকল উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে মিলে আমরা শিক্ষার অগ্রগতিতে অবদান রাখতে পারবো।
আপনাদের সকলের সহযোগিতা ও দোয়া কামনা করছি, আমি যাতে আমার নতুন কর্মস্থল (পবিপ্রবি)’র উপাচার্যের দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করতে পারি।”
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, সত্যবাদিতা, দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ ও ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠা করতে পারলে উপাচার্যের দায়িত্ব কঠিন কিছু নয়। দেশের সকল ভেটেরিনারিয়ানদের লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশের মানুষের সেবা করা। বিশেষ করে দেশের কৃষকদের উন্নয়নে কাজ করা উচিত। এই লক্ষ্য পূরণে কোয়ালিটি গ্রাজুয়েট তৈরির বিকল্প নেই। তাই কোয়ালিটি গ্রাজুয়েট তৈরির মাধ্যমে জাতির সেবায় উপাচার্যদের এগিয়ে আসা উচিত।
অধ্যাপক ড. মো. বাহানুর রহমান বলেন, ভেটেরিনারি অনুষদ শুরু থেকেই দেশের প্রাণিসম্পদ খাতের উন্নয়ন, রোগ প্রতিরোধ এবং টেকসই উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে গবেষণা ও শিক্ষার মাধ্যমে নিরলসভাবে কাজ করে আসছে। আধুনিক গবেষণাগার, কারিগরি দক্ষতা বৃদ্ধি, এবং উদ্ভাবনী উদ্যোগের মাধ্যমে প্রাণিসম্পদ রক্ষায় এই অনুষদ দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
তিনি আরো বলেন, আমাদের এই প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের এই অর্জন শুধু তাদের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এটি শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে ভেটেরিনারি অনুষদের ঐতিহ্য এবং অবদানের এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।